Health experience | Write here | Write and share your health experience to help community.

হাম বা রুবেলা কেন হয়? বাচ্চাদের কখন হাম এর টিকা দিতে হবে এর লক্ষণ ও প্রতিকার

Fahima Akter Wednesday, September 15, 2021


হাম একটি ভাইরাসজনিত রোগ। যাকে রুবেলাও বলা হয়ে থাকে। এটি ভাইরাল সংক্রমণ যা শ্বাসযন্ত্রের মধ্যে শুরু হয়। এছাড়া এটি জার্মান মিজলস নামেও পরিচিত। শিশুরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। সময় মতো হামের টিকা অথবা চিকিৎসা না করালে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। হাম যে শুধু শিশুদের হয়ে থাকে এমনটা নয় বড়দেরও হাম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও বিশ্বের অনেক মানুষ এই রোগে মৃত্যুবরণ করে থাকে। হামের কারণে বছরে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা যায়। বিশেষ করে যাদের বয়স ৫ বছরের কম। 


হাম ভাইরাস ব্যক্তির নাক এবং গলার শ্লেষ্মায় বাস করে। রোগটি বাতাসের মাধ্যমে এবং সংক্রমিত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাস ভূপৃষ্ঠে এবং বাতাসে ২ ঘন্টা সক্রিয় থাকে। ৯০ % সম্ভাবনা রয়েছে যে, যে ব্যক্তিকে হামের টিকা দেওয়া হয়নি সে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগটি দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে পর্যায়ক্রমে প্রকাশ পায়। প্রথম ১০-১৪ দিন ইনকিউবেশন পিরিয়ড, যেখানে কোন লক্ষণ দেখা যায় না।




হামের কারণ ও লক্ষণ

হাম একটি সংক্রামক রোগ । হাম প্রথমে সংক্রমিত ব্যক্তির গলা এবং নাকের মধ্যে পুনরুউৎপাদন করে। যখন এই হাম রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কাশি, হাঁচি বা এমনকি কথা বলে, তখন এই ভাইরাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে অন্য কোন ব্যক্তি শ্বাস নিলে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এমনকি এই ভাইরাস বাতাসে কমপক্ষে ২ ঘন্টা সক্রিয় থাকে এবং বিভিন্ন বস্তুতে লেগে থাকে। এসময় যদি কোন ব্যক্তি ভাইরাস লেগে থাকা হাতে চোখ এবং নাক স্পর্শ করেন তবে সেই ব্যক্তি এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেন। প্রতিটি মানুষের জন্য হামের টিকা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোন ব্যক্তির ছোট বেলায় হামের টিকা না নিয়ে থাকে বড় হওয়ার পর সেই ব্যক্তির হাম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যে সব দেশ বা অন্চলে মানুষের হাম বেশি পরিমানে হয় অই সব জায়গায় ভ্রমণ করলে হাম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 


ভিটামিন-এ এর ​​অভাব হাম রোগের সাথে সম্পর্কিত। এছাড়াও ভিটামিন-এ এর অভাবে গুরুতর লক্ষণ এবং জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

এই রোগের লক্ষণগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ১০ থেকে ১৪ দিন পরে উপস্থিত হয়। এই রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

১. কাশি

২. জ্বর

৩. সর্দি

৪. লাল চোখ

৫. গলা ব্যাথা

৬. মুখের ভিতরে সাদা দাগ

৭. ফুসকুড়ি


হামের প্রধান লক্ষণ হলো ব্যাপকভাবে ত্বকের মধ্যে ফুসকুড়ি ছড়িয়ে পড়া। এই ফুসকুড়ি গুলো দেহের মধ্যে ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। 

এই ফুসকুড়িগুলি সাধারণত প্রথমে মাথায় দেখা দিতে হতে শুরু করে। তারপর শরীরের অন্যান্য অংশে এগুলো ছড়িয়ে পড়ে।



হাম রোগের বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে।যেমন-

১। ইনকিউবেশন পিরিয়ড: হাম ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার প্রথম ১০ থেকে ১৪ দিন হলো ইনকিউবেশন পিরিয়ড। ইনকিউবেশন পিরিয়ড রোগের কোন চিহ্ন এবং লক্ষণ নেই।


২। মৃদু হাম: হাম সাধারণত হালকা থেকে মাঝারি জ্বর দিয়ে শুরু হয়। যার ফলে প্রায়ই অবিরাম কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ ফুলে যাওয়া এবং গলা ব্যাথা হয়ে থাকে। এই হালকা সংক্রমণ দুই বা তিন দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।


৩। ফুসকুড়ি: যখন কোন ব্যক্তির মুখে প্রথমে ফুসকুড়ি হয় তখন ধীরে ধীরে সেই ব্যক্তির শরীরের অন্যান্য অংশে ফুসকুড়ি ছড়িয়ে যায়৷ ফুসকুড়ি হলো ছোট লাল দাগ যা সামান্য উঁচু হয়। দাগ এবং দাগের গুচ্ছের কারণে ত্বক দাগযুক্ত লাল দেখায়। ফুসকুড়িগুলি তখন বাহু এবং পায়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং শরীরের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফুসকুড়ি শরীর থেকে ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যায়।


৪। সংক্রামক সময়কাল: একটি ফুসকুড়ি চার দিন পর্যন্ত থাকতে পারে এরপর আবার নতুন ফুসকুড়ি দেখা দেয়।




হাম রোগের প্রতিরোধ

টিকা হলো রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করার সর্বোত্তম উপায়। 

হামের জন্য শিশুদের টিকা: শিশুদের হাম থেকে মুক্ত রাখার জন্য ডাক্তাররা টিকা দেওয়ার পরামর্শ দেন। প্রথম ডোজ শিশুদের ১২ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে দিতে হয়। এবং দ্বিতীয় ডোজ ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে দিতে পরামর্শ দেয়া হয়। 


হামের জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের করনীয়: প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও হাম হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কখনো কখনো হাম কবলিত এলাকায় ভ্রমণ, অস্বাস্থ্যকর জায়গায় কাজ করা এবং অন্যান্য রোগের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে হাম হওয়ার ঝুঁকি বারে।


পরিবারের কোন সদস্যের যদি হাম হয়ে থাকে তাহলে সুস্থ ব্যক্তিদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সংক্রামিত ব্যক্তির জন্য আলাদা থাকার বেবস্থা করতে হবে। কারণ, সে অন্যকেও সংক্রমিত করতে পারে। ফুসকুড়ি বের হওয়ার প্রায় ৪ দিন আগে থেকে পরের ৪ দিন হাম খুব সংক্রামক থাকে। সংক্রামিত ব্যক্তির নির্দিষ্ট জায়গা থেকে বের হওয়া এবং মানুষের সাথে দেখা করা এড়িয়ে চলা উচিত। দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে ।



বাচ্চাদের হাম হলে বাচ্চারা অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যায়। তাই এই সময় বাচ্চাদের অনেক পুষ্টিকর এবং সহজপাচ্য খাবার খাওয়ানো উচিত। যেমন-

১। যেসব বাচ্চাদের বয়স ৫/৬ মাস তাদের অনেক নরম করে ভাত খাওয়াতে হবে। সেই সাথে কলা, স্যুপ, ডিম, সবজি খাওয়াতে হবে। 

২। বাচ্চারা অসুস্থ হলে এক সাথে বেশি ভাত খেতে চায় না। তাই একবারে বেশি করে না খাইয়ে কিছু ক্ষন পর পর খাওয়াতে হবে। বার বার একই খাবারের পরিবর্তে খাবারের ধরন বদলাতে হবে। 

৩। ছোট বাচ্চাদের অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। 

৪। হামে আক্রান্ত বাচ্চাদের পানি ফুটিয়ে খাওয়াতে হবে। 

৫। এছাড়াও টাটকা ছানার সন্দেশ, পুডিং, মিষ্টি ইত্যাদি খাবার খাওয়াতে হবে। 



হামের চিকিৎসা

হামের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাল ইনফেকশনে কাজ করে না। হাম হওয়ার ২ ঘন্টার মধ্যে হামের টিকা দেওয়া হয়। ইমিউনোগ্লোবুলিন নামে একটি ইমিউন প্রোটিন ডোজ রয়েছে যা এক্সপোজারের ছয় দিনের মধ্যে দেওয়া হয়। যার কারণে হাম বের হওয়ার সাথে সাথেই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। কেননা চিকিৎসক হামের রোগীকে সঠিক ঔষধ দিয়ে থাকে এবং সর্তকতা অবলম্বন করতে বলে।


কিছু জীবন ধারার পরিবর্তন হামের উপসর্গগুলিও কমাতে সাহায্য করতে পারে।যেমন-

১। বিশ্রাম নিতে হবে এবং কঠোর পরিশ্রম এড়িয়ে চলতে হবে। 

২। তরল জাতীয় খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে।  

৩। হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে হবে। 

৪। চোখের উপর কোন রকম চাপ সৃষ্টি হয় এমন কাজ এড়িয়ে চলতে হবে যেমন লম্বা সময় মোবাইল ব্যাবহার করা অথবা ছোট অক্ষরে লেখা পরা ৷ 



হাম রুবেলা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অনেকেরই ধারনা হামের টিকা অটিজমের কারণ হতে পারে ।তবে এখন পর্যন্ত এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নাই।


Share

You May Like

Cloud categories

itchy aids hepatic encephalopathy heartburn alcoholism hormone replacement therapy cardiac arrest psoriatic arthritis gas surgery bradycardia severe allergies ebola virus diabetes conjunctivitis genital warts hair loss restlessness hypotension sunburn hydration illness duodenal ulcer bone abdominal pain lymphomas carcinomas bones and joints dehydration dementia bladder dry skin pid gum swelling multiple sclerosis

নাভির মধ্যে ৬৭ রকম ব্যাক্টিরিয়ার উপস্থিতি টের পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা

অনেকেই আছেন যারা অন্তরঙ্গ মুহূর্তে নাভিতে জিভ দিয়ে থাকেন । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের শরীরে ...

0 Like

নাক বন্ধ হলে এন্টাজল দিলে কি ক্ষতি হয়?

 নাক বন্ধে নাকের ড্রপ ব্যবহারে কি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে?উত্তর: কিছু কিছু নাকের ...

0 Like

গোপন ক্যামেরা শনাক্ত করার পদ্ধতি

আজকাল নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে সিসি ক্যামেরা মানে গোপন ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আবার বেশ কিছ ...

2 Like

হটাত জ্বরে আক্রান্ত হলে করনীয়

জ্বর কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। অনেক জ্বরেই কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। জ্বর হলে ...

1 Like

Never Take Medicine Without Consulting The Doctor.

Medicines have become a part of our life because every one of us needs them at least once ...

1 Like

মাথায় উকুন হলে কি করবেন?

যার একবার হয়েছে সেই জানে এর কষ্ট। তাই তো সবাই বেঁচে বেঁচে থাকে উকুনের থেকে। কিন্তু তবু কি ...

0 Like

শীতকালে সর্দি, কাশি, নাক বন্ধ স্বাভাবিক ব্যাপার তবে যারা দীর্ঘদিন নাকের ড্রপ ব্যবহার করছেন তাদের কিছুটা সতর্ক হওয়া দরকার

কিছু কিছু নাকের ড্রপ আছে যা দীর্ঘদিন ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে স্যাল ...

2 Like

কিভাবে ঘরে বসেই অবাঞ্ছিত লোম দূর করবেন

এই অবাঞ্ছিত লোমের কারণে অনেককে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। বিভিন্ন বিউটি টিট্রমেন ...

2 Like