দিন দিন ডিপ্রেশন বেড়ে যাচ্ছে কি
বর্তমান সময়ে আমাদের জীবনের অন্যতম বড় সমস্যা ডিপ্রেশন। আমাদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, এমনকী ন ...
Health experience | Write here | Write and share your health experience to help community.
Fahima Jara
Wednesday, January 12, 2022
উদ্বেগ ব্যাধি বা Generalized anxiety disorder (GAD) একধরনের মানসিক ব্যাধি। মানুষের জীবনে নানা রকম প্রভাবের ফলে উদ্বেগ ব্যাধি ঘিরে ধরে। এতে করে মানসিক চাপের তৈরি হয়৷ মানসিক চাপ মানুষকে স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে অনেকটা দূরে সরিয়ে নেয়। কেননা যখন কেউ স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে চায় তখন যদি কোন বিষয় নিয়ে মানসিক চাপে থাকে তাহলে সঠিক ভাবে জীবন যাপন করা কঠিন হয়ে পড়ে। উদ্বেগ ব্যাধি হচ্ছে মানসিক চাপের আরেকটি অংশ। যদি দীর্ঘসময় ধরে কোন ব্যক্তি উদ্বেগ ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকেন, তাহলে তার শরীরে নানা রকম রোগের স্থায়িত্ব পাওয়া শুরু করতে থাকবে। উদ্বেগের সাথে লড়াই করা বেশির ভাগ মানুষ প্রায়ই অস্থিরতার মধ্যে থাকেন। কেননা যে ব্যাক্তির মধ্যে একবার উদ্বেগ ব্যাধি প্রবেশ করে তার এটা থেকে বেরোতে অনেক সময় লেগে যায়।
ব্যক্তির তাৎক্ষনিক পরিবেশ এবং শরীরের হরমোন ভারসাম্যের একটি জটিল সমন্বয় থেকে উদ্বেগ ব্যাধি তৈরি হয়ে থাকে। ব্যক্তির পারিপার্শ্বিকতা এবং জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলার সময়, ট্রমা, চাপের ঘটনা, প্রিয়জনের মৃত্যু এবং আসক্তির মতো বিষয়গুলি উদ্বেগ সৃষ্টি করতে প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে। এই বিষয়গুলি ছাড়াও জেনেটিক্স এর কাড়নেও এই রোগে আক্রান্তর হতে পারে। সাধারণত উদ্বেগ ব্যাধি অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য অবস্থার সাথে সমান্তরালভাবে ঘটে। পুরুষদের তুলনায় মহিলারা উদ্বেগ ব্যাধিতে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
উদ্বেগ ব্যাধি হওয়ার নানা রকম কারণ রয়েছে। একেক ব্যক্তি একেক রকম প্রভাবের ফলে উদ্বেগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, যেমন-
১/ মস্তিষ্কের রসায়ন : স্নায়ু কোষের মধ্যে তথ্য প্রেরণকারী নিউরোট্রান্সমিটারগুলি যদি দক্ষতার সাথে না চলে, তাহলে এটি মেজাজকে প্রভাবিত করতে পারে। যার ফলে মানুষ খুব দ্রুত উদ্বেগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে।
২/ জেনেটিক্স : কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে পারিবারিক জেনেটিক্সের কারণও কিছু কিছু ব্যক্তির মানুষিক ভারসাম্য বিকাশ করতে পারে না।
৩/ ব্যক্তিত্ব : যে ব্যক্তির জীবনের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে সে স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারে না। নানা রকম পদক্ষেপে সে নিজেকেই দোষী ভেবে থাকে। যার কারণে নিজের মধ্যে একরকম মানসিক চাপের মধ্যে ভোগে।
৪/ পরিবেশগত কারণ : মানসিক চাপের অন্যতম একটি কারণ পরিবেশ৷ পরিবেশে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনাই মানুষের জীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে করে ব্যক্তি পরিবেশগত কারণে উদ্বেগ ব্যাধিতে ভোগে থাকেন।
১. অতিরিক্ত চিন্তা
২. কোন পরিস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে উপলব্ধি করা।
৩. সিদ্ধান্তহীনতা
৪. উদ্বেগ ছেড়ে দিতে অক্ষমতা
৫. অস্থিরতা বা প্রান্তে অনুভূতি
৬. মনোনিবেশে অসুবিধা
এছাড়াও কিছু শারীরিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে:
১. ক্লান্তি
২. অনিদ্রা বা ঘুমাতে সমস্যা
৩. শরীরের ব্যাথা
৪. শরীর কাঁপানো
৫. নার্ভাসনেস
৬. ঘাম
৭. বমি বমি ভাব
৮. ডায়রিয়া
৯. খিটখিটে মেজাজ
১০. পর্যাপ্ত মনোযোগের ঘাটতি
যদিও উদ্বেগ ব্যাধির মতো রোগ প্রতিরোধ করা যায় না। তবুও বিভিন্ন উপায়ের মাধ্যমে লক্ষণগুলি কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে৷ যেমন-
১/ ব্যায়াম : সপ্তাহে কমপক্ষে ৩ দিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করতে হবে। কারণ ব্যায়ামের ফলে মানুষের মস্তিষ্ক বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেই সাথে শরীরে ডোপামিন উৎপন্ন হয়। এছাড়াও ব্যায়াম মানুষকে শরীর এবং মানুষের মনকে সুস্থ রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।
২/ ক্যাফিন খাবার গ্রহণ কমাতে হবে : যেসব খাবার শরীরের জন্য উত্তেজক তৈরি করে সেগুলোকে অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে। যেমন- চা, কফি, চকলেট, এনার্জি ড্রিংক ইত্যাদি। এসব জিনিস গুলো অতিরিক্ত মাএায় খাওয়ার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে এবং সেই সাথে উদ্বেগ ব্যাধির প্রভাব বেড়ে যেতে পারে।
৩/ শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করা : প্রতিটি মানুষকে এমন ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে হবে যাতে করে ব্রেন সবসময় সচল থাকে। যদি সঠিক ভাবে শ্বাস প্রস্বাস নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে মানুষের উদ্বেগ ব্যাধি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে গবেষকরা বলেছেন যে, দৈনিক কমপক্ষে ৫ মিনিটের মতো শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা উচিত।
৫/ পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম : প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। কারণ মানুষ যত কম ঘুমায় ততো বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। আর যত বেশি উদ্বেগ হয় সে ততো কম ঘুমায়। যার কারণে উদ্বেগ ব্যাধিকে এড়িয়ে চলতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন।
৬/ নিজেকে সময় দেয়া : মানুষ যেসব বিষয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে, সেটা এড়িয়ে চলতে হলে নিজেকে সময় দিতে হবে। মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এমন কার্যকলাপ অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু এদের সাথে সব সময় মেলামেশা করতে হবে। চাপপূর্ন সময়টাকে নিজেকেই এড়িয়ে চলতে হবে।
৭/ অ্যালকোহল গ্রহণ কমাতে হবে : আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই নিজের স্নায়ুকে শান্ত করার জন্য অ্যালকোহল সেবন করে থাকে। কিন্তু অ্যালকোহল স্বাস্থ্যর জন্য খুবই ক্ষতিকারক। অ্যালকোহল সেবনের ফলে অনেক সময় মানুষের উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৮/ অতিরিক্ত উত্তেজনা : উদ্বেগ ব্যাধি রোধ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত উত্তেজনা হ্রাস করা খুবই জরুরি। কারণ যখন কোন ব্যক্তি অতিরিক্ত উত্তেজনায় থাকে তখন তার মানসিক চাপ একাই বেড়ে যেতে থাকে।
৯/ পোষা প্রানী বাড়িতে রাখা : যখন বাড়িতে কোন পোষা প্রানী রাখা হয় তখন সেটাকে নিয়ে নানা রকম ভাবে ব্যস্ত থাকতে হয়। আর যখন নিজের মস্তিষ্ক কোন কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকে তখন মানসিক চাপ কম থাকে। যেসব মানুষ অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকে বাড়িতে কুকুর, বিড়াল, পাখি, খরগোস ইত্যাদি প্রানী পোষতে পারে। এতে করে উদ্বেগ ব্যাধি হ্রাস হতে সহায়তা করবে।
১০/ সবসময় হাসিখুশি থাকা : সবসময় হাসিখুশি থাকলে মন ভালো থাকে৷ যার কারণে মানসিক চাপ অথবা উদ্বেগ ব্যাধি এড়াতে হলে সবসময় হাসিখুশি থাকতে হবে। সুস্থ শরীর মানেই সুস্থ মন। আর মনকে ভালো রাখতে হলে সবসময় হাসিখুশি থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।
এছাড়াও কিছু জিনিস প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। যেমন-
১. নিজেকে ভালো কাজে নিয়োজিত রাখতে হবে।
২. বাগান পরিচর্চার কাজ করতে হবে।
৩. গল্পের বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে।
৪. বন্ধুদের ভালো সঙ্গ থাকতে হবে।
৫. আঁকাআঁকির মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে।
৬. যতটা সম্ভব মোবাইল ফোন ব্যবহার সীমিত করতে হবে।
৭. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
৮. বিভিন্ন রকম কাজের মাধ্যমে নিজেকে সবসময় ব্যস্ত রাখতে হবে।
উদ্বেগ এর উপসর্গ দূর করার জন্য চিকিৎসকরা প্রায়ই কিছু ঔষধ নির্ধারিত করে থাকে। যদি কোন ব্যক্তির মানসিক চাপ খুবই বেশি থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী থেরাপি নিতে হবে । মানসিক চাপ হওয়ার প্রতিটি কারণ চিকিৎসকের সাথে খোলাখুলি ভাবে শেয়ার করতে হবে। এরপরও চিকিৎসক রোগীকে কিছু ঔষধ দিয়ে থাকেন। যেমন-
১. এন্টি ডিপ্রেসেন
২.বাষ্পীরন
৩.বেনজোডিয়াজেপাইনস
এই ঔষধ গুলো সাধারণত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নেওয়া হয়। ঔষধ গুলো সেবনের ফলে উদ্বেগের লক্ষণগুলি অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এছাড়াও অনেকে সাইকোথেরাপি দিয়ে থাকেন। চিকিৎসকরা এই সাইকোথেরাপিকে উদ্বেগ ব্যাধি চিকিৎসার ক্ষেত্রে মৌলিক বলে মনে করেন। চিকিৎসক উদ্বেগ ব্যাধির সমস্যা সমাধানের জন্য রোগীর প্রতিটি কথা খুব মনোযোগ সহকারে শুনেন। সেইসাথে রোগীকে কি করতে হবে সেই বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে৷ এতে করে রোগীর মানসিক চাপ অনেকাংশে কমে যায় এবং রোগী স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে সক্ষম হয়।
SHARE THIS
Share
alcoholism atherosclerosis vaginal itching disinfectant gum swelling infertility reduces wrinkles peptic ulcer lactose intolerance calcium and vitamin d supplement ovarian cancer ankylosing spondylitis spine skin grafts etc. lung high cholesterol migraine flatulence vitamin d deficiency pyelonephritis gastric problems hives thrush dry eye renal insufficiency streptococcus dry nutritional supplement headache prostate cancer anxiety disorders parkinson's disease myocardial infarction insect bites gerd
বর্তমান সময়ে আমাদের জীবনের অন্যতম বড় সমস্যা ডিপ্রেশন। আমাদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, এমনকী ন ...
1 Like
স্বাভাবিক ডেলিভারি ঝুঁকিপূর্ণ হলে মা ও শিশুর সুস্থতার স্বার্থে সিজার পদ্ধতিতে ডেলিভারির প্ ...
2 Like
অ্যালকোহল এমন একটা পানীয় যা দেখলেই পান করতে মন চায়। আগের দিনে অ্যালকোহল জলের বিকল্প হিসেব ...
2 Like
প্রাত্যহিক জীবনে কতো কিছুই না খাওয়া হয়। কিন্তু সবকিছু কি আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাওয়া যায়? ...
0 Like
১. ক্যাকটাস: ক্যাকটাস গাছের পাতা সাধারণত কাটাযুক্ত হয়ে থাকে। দক্ষিন আমেরিকায় এই গাছ বেশি জ ...
0 Like
পেটের চর্বি কি আপনার ঘুম হারার করে দিয়েছে? আজকাল ছোট বর অনেকেই এই সমস্যায় জর্জরিত। কিন্তু ...
1 Like
গত পর্বে লিখা হয়েছিল কিভাবে ক্রাঞ্চেস (Crunches) করবেন। না পরে থাকলে নিচের লিঙ্ক থেকে দেখে ...
1 Like
পানির সঙ্গে প্রতিদিন অন্তত একবার করে মধু মিশিয়ে পান করতে পারলে তা আমাদের শরীরের জন্য ভালো। ...
0 Like
New to Welfarebd? Sign up
Subscribe to our newsletter & stay updated
0